মানুষের মতোই 'শিখতে পারা' মেশিন




বিজ্ঞানীরা এমন একটি মেশিন উদ্ভাবন করেছেন যেটা মানুষের মস্তিষ্কের মতোই নতুন তথ্য শিখতে পারেবৃহস্পতিবার গবেষকরা একথা জানিয়েছেনএকটি বিজ্ঞান বিষয়ক পত্রিকায় একে একটি কম্পিউটার মডেল হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছেএতে বলা হয়, এর মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা কৃত্রিম বুদ্ধিবৃত্তি সৃষ্টির ক্ষেত্রে এগিয়ে গেলপ্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ‘এই কম্পিউটার মডেলটি মানুষের মতো একটি উদাহরণ থেকে নতুন নতুন ধারণা শিখতে সক্ষমএতে আরো বলা হয়েছে, ‘যদিও প্রাথমিক পর্যায়ে মডেলটি এখন শুধুমাত্র অক্ষর থেকে লিখা শিখতে পারেতবে ভবিষ্যতে এটা নাচ, সংকেত, অঙ্গভঙ্গি, কথা বলা ও ইঙ্গিত ভাষার মতো চিহ্নভিত্তিক জিনিসও শিখতে পারবেম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউ ফর টেকনোলোজি (এমআইটি)র প্রফেসর জশুয়া তেনেনবাউয়াম জানান, তিনি এমন একটি মেশিন তৈরি করতে চান যেটা বালক-বালিকাদের মানসিক সামর্থ্যকে অনুকরণ করতে সক্ষমএ পদ্ধতিকে বলা হয়, বেসিয়ান প্রোগ্রাম লার্নিং (বিপিএল)

মানুষের অস্তিত্বই সঙ্কটে




বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠেছে এই পৃথিবীখেতে ফসল নেইশ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার উপযুক্ত হাওয়া নেইতাই ভিন্‌ গ্রহে উপনিবেশগড়ার খোঁজে পৃথিবী ছেড়ে পাড়ি দিয়েছিল এক দল নভশ্চরখুঁজেও পেয়েছিলবছরখানেক আগে মুক্তি পাওয়া ক্রিস্টোফার নোলান পরিচালিত ইন্টারস্টেলারছবিটি দর্শককে নিয়ে গিয়েছিল এ রকমই এক কল্পবিজ্ঞানের জগতে
পৃথিবীর বাইরে ঘর বাধার স্বপ্ন মানুষের অনেক দিনেরসেই স্বপ্নকে সত্যি করে তুলতে মহাকাশে ফোটাচ্ছে ফুলওকিন্তু একই সঙ্গে চলছে উল্টো দৌড়নানা ভাবে বিপন্ন করে তোলা হচ্ছে পৃথিবীকেএই পথ থেকে সরে না এলে ভিন্গ্রহে বসত গড়ার আগেই হয়তো পৃথিবীতে মুছে যাবে মানুষের অস্তিত্ব, হুঁশিয়ার করলেন বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিংআজ বিবিসির রিথ বক্তৃতাদেওয়ার আগে তিনি মনে করিয়ে দিলেন, ‘‘অন্য কোনও গ্রহে উপনিবেশ গড়ে তুলতে অন্তত একশো বছর লেগে যাবেতত দিন অন্তত পৃথিবীটাকে বাসযোগ্য করে রাখি আমরা’’ কী ভাবে তা সম্ভব, তার দাওয়াইও দিলেন তিনিহকিংয়ের কথায়, ‘‘পৃথিবীর বিপদগুলিকে চিনে নিয়ে তাতে লাগাম টানতে হবে’’
বিপদগুলি কী
পরমাণু যুদ্ধ, পরিবেশ দূষণ, উষ্ণায়ন, জিন বদলানো ভাইরাসতালিকাটি দীর্ঘহকিংয়ের বক্তব্য, একের পর এক দেশ তাদের অস্ত্রভাণ্ডারে মজুত করছে পরমাণু বোমাবেহিসেবি জীবনযাপনের জন্য বেড়ে চলেছে জ্বালানি খরচযা বিষ ছড়াচ্ছে পরিবেশেউন্নত দেশগুলির গবেষণাগারে গোপনে হয়ে চলেছে একের পর এক পরীক্ষা, রাসায়নিক বিক্রিয়াযা জন্ম দিচ্ছে কালান্তক ভাইরাসেরআর এই সবই ছায়া ফেলছে মানবজাতির আয়ুতে
তাহলে মানবজাতিকে এর থেকে বাঁচানোর উপায়? বিজ্ঞানী হিসেবেই তিনি  সাবধান করে দিয়েছেন বি়জ্ঞান গবেষণার ফলে ঘনিয়ে আসা সর্বনাশ নিয়েহকিংয়ের বক্তব্য, বি়জ্ঞান গবেষণাকে মুক্ত করতে হবেসবার অগোচরে আর গবেষণা নয় নয়, পরীক্ষা-নিরীক্ষা বা গবেষণা যা চলছে, তা জানাতে হবে সকলকেবোঝাতে হবে মানুষকে
কৃত্রিম ভাইরাস, বুদ্ধিমান কম্পিউটার কিংবা বিশ্ব উষ্ণায়ন যে সেই সব বিপদের নমুনা, তা তিনি বলে আসছেন দীর্ঘদিন ধরেইআজও তিনি বলেন, ‘‘এক বছরের মাপকাঠিতে হয়তো এই বিপদের মাত্রা হিসেব করা যাবে নাকিন্তু একসঙ্গে অনেকগুলো বছরহাজার কিংবা দশ হাজার বছরেবিপদ প্রায় নিশ্চিততার আগে যদি মানুষ অন্য কোনও গ্রহে উপনিবেশ গড়ে তুলতে পারে, চলে যেতে পারে অন্য কোনও নক্ষত্রের আশপাশে, তা হলে হয়তো পৃথিবীতে সর্বনাশ ঘনিয়ে এলেও মহাবিশ্ব থেকে মানুষ নিশ্চিহ্ন হবে না’’
তবে এখনই আস্থা হারাচ্ছেন না কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের এই বিজ্ঞানীএক দিকে যেমন তিনি দেখতে পাচ্ছেন, পৃথিবীর বিকল্প না খুঁজে পেলে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে মানুষ, তেমনি তাঁর বিশ্বাস, মানুষই পারবে এই বিপদ নিয়ন্ত্রণ করতেতাই যাঁরা বি়জ্ঞানী হতে চান, তাঁদের জন্য হকিংয়ের পরামর্শ, গবেষণা কোন পথে এগিয়ে চলেছে তা জনসাধারণকে জানানোর দায়িত্ব তাঁদেরই নিতে হবেএটাও দেখতে হবে যে, গবেষণার অগ্রগতি যেন ঠিক পথে এগোয়গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় যদি সকলের বিজ্ঞান সম্পর্কে সাধারণ ধারণা থাকে তবেই তা সম্ভব
বিজ্ঞানীদের হকিংয়ের তাই পরামর্শ, ‘‘জনগণকে সোজা ভাষায় জানান, আপনি কী করতে চাইছেন, কে জানে, এর ফলে আপনিই হয়তো ভাল করে চিনবেন নিজেকে’’

http://www.anandabazar.com/others/science/hawking-s-warning-on-human-existence-in-crisis-1.289250

সৌরমণ্ডলের বুক কাঁপিয়ে তীব্র গতিতে ধেয়ে আসছে দানব তারা




ধ্বংসের দিন কি কড়া নাড়ছে?
কোনও ভয়ঙ্কর দুর্যোগের দিন কি আমাদের দোড়গোড়ায় এসে গিয়েছে?
যে দিন বিশাল কোনও মহাজাগতিক বস্তুর আচমকা ধাক্কায় টালমাটাল হয়ে যাবে আমাদের সৌরমণ্ডল? ছিটকে এই গ্যালাক্সি থেকে বের করে দিতে পারে অন্যান্য তারা বা মহাজাগতিক বস্তুকে
থরথরিয়ে কেঁপে উঠবে আমাদের এই সৌর পরিবার?

সে দিন নিমেষে উধাও হয়ে যাবে আমাদের এই বাসযোগ্য গ্রহের বায়ুমণ্ডলআর শ্বাস-বায়ু থাকবে না বলে পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব বজায় রাখাটা রীতিমতো অসম্ভব হয়ে পড়বেবদলে যাবে এই সৌর পরিবারের সবকটি গ্রহের কক্ষপথবদলে যাবে দিন-রাত আর বছরের হিসেববদলে যাবে তাদের ঋতু আর বায়ুমণ্ডলগোটা সৌরমণ্ডলে শুরু হয়ে যাবে অসম্ভব উথালপাতাল
একেবারেই হালে নাসার স্পিৎজার স্পেস টেলিস্কোপ (এসএসটি) ও ওয়াইড-ফিল্ড ইনফ্রা-রেড সার্ভে এক্সপ্লোরার (ওয়াইজ) যে তথ্য ও ছবি পাঠিয়েছে, তাতে সেই আশঙ্কা রীতিমতো জোরদার হয়ে উঠেছেনাসা জানাচ্ছে, ব্রহ্মাণ্ডে আমাদের ঠিকানা- মিল্কি ওয়ে গ্যালাক্সিতে যে কোনও সময়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারেআমাদের এই গ্যালাক্সিতেই অসম্ভব ঝোড়ো গতিতে ছুটে আসছে একটি দানবের চেহারার মতো তারাযার নাম- জিটা ওফিউচিবা জিটা ওফযাকে বলে সুপারসোনিক গতিআমাদের গ্যালাক্সিতে এর আগে এত জোরে কোনও তারাকে ছুটতে দেখা যায়নিকত জোরে, জানেন? ঘণ্টায় ৫৪ হাজার মাইল বা সেকেন্ডে ২৪ হাজার কিলোমিটারঅত জোরে ছুটতে গিয়ে সে যাকে বলে, লাথি মেরে হটিয়ে দিচ্ছে সামনে পড়ে থাকা অন্যান্য তারা, মহাজাগতিক বস্তু, গ্যাস বা ধুলোবালিকেতার ছোটার পথের সামনে যাকে পাচ্ছে, তাকেই ফুৎকারে উ়ড়িয়ে দিচ্ছে আমাদের সূর্যের চেয়ে অনেক গুণ ভারী ওই তারা জিটা ওফিউচিসমুদ্রে ঝোড়ো গতিতে ছোটার সময়ে যে ভাবে জলকে তুড়ি মেরেই সরিয়ে দেয় সর্বাধুনিক জাহাজগত সপ্তাহে সংশ্লিষ্ট গবেষণাপত্রটি পেশ করা হয়েছে ফ্লোরিডার কিসিমিতে, আমেরিকান অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির মাসিক সম্মেলনেগবেষকদলের নেতৃত্বে  রয়েছেন মার্কিন মুলুকের উইয়োমিং বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞানী উইলিয়াম চিক
কোনও যুদ্ধবিমান খুব নীচু দিয়ে উড়ে যাওয়ার সময় যেমন আমাদের বাড়ি-ঘরদোরের জানলা-দরজার কাচের শার্সি ঝনঝন করে ওঠে, তাতে চিড় ধরে আর পরে তা চুরচুর করে ভেঙে যায়, ঠিক তেমনি ভাবেই আমাদের গ্যালাক্সিতে ওই অসম্ভব ভারী তারার সুপারসোনিক গতি’-র জন্য গোটা সৌরমণ্ডলের থরথরিয়ে কেঁপে ওঠার জোর আশঙ্কা দেখা দিয়েছেএই ঘটনাকে বলে, ‘বাও শকএকটা অসম্ভব জোরালো তরঙ্গের অসম্ভব রকমের জোরালো ধাক্কাযার চেহারাটা দেখতে অনেকটা ধনুকের মতো হয় বলে ওই ধাক্কার নাম দেওয়া হয়েছে বাও শক

একেবারেই হালে নাসার নজরে পড়া ওই অভিনব ঘটনা সম্পর্কে কী বলছেন বিশিষ্ট জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা?
কলকাতার সত্যেন্দ্রনাথ বোস ন্যাশনাল সেন্টার ফর বেসিক সায়েন্সেসের সিনিয়র প্রফেসর, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন জ্যোতির্বিজ্ঞানী সন্দীপ চক্রবর্তী জানাচ্ছেন, ‘‘আমাদের গ্যালাক্সিতে এর আগে কোনও তারাকে এত জোরে ছুটতে দেখা যায়নিআমাদের সূর্যও ছুটছেকিন্তু তার গতি জিটা ওফিউচি’-র কাছে একেবারেই নস্যিওই অসম্ভব জোরে ছোটার জন্য সে প্রচণ্ড শক্তিশালী তরঙ্গের জন্ম দিচ্ছে এই গ্যালাক্সিতেযা অবলোহিত রশ্মির চেহারায় ধরা পড়ছেসেই তরঙ্গ সামনে থাকা কণার স্রোত, গ্যাস তারা, ধুলোবালি আর অন্যান্য মহাজাগতিক বস্তুকে সজোরে ঠেলে সরিয়ে দিচ্ছেসরিয়ে দিতে গিয়ে সেগুলোকে অসম্ভব গরম করে দিচ্ছেযে ভাবে কোনও রাস্তার ক্রসিংয়ে গ্রিন সিগন্যালথাকলেও হঠাৎ কোনও গাড়ি ব্রেক চাপলে, তার পিছনের গাড়িগুলো এসে তার পিছনে একের পর এক ধাক্কা মারে, ঠিক তেমনি ভাবেই ওই তরঙ্গ এসে ধাক্কা মারতে পারে আমাদের সৌরমণ্ডলকেঅসম্ভব জোরালো সেই ধাক্কাটাধাক্কার জোরের ওপরেই নির্ভর করছে, তা কতটা টালমাটাল করে দেবে আমাদের সৌরমণ্ডলতবে এত জোরালো তরঙ্গের একটা প্রভাব তো আমাদের গ্যালাক্সির সর্বত্রই পড়ার সম্ভাবনা রয়েছেতাতে এই সৌরমণ্ডলের অনেক কিছুই বদলে যেতে পারেবদলে যেতে পারে এই সৌর পরিবারের সবকটি গ্রহের কক্ষপথবদলাতে পারে তাদের দিন-রাত আর বছরের হিসেববদলে যেতে পারে তাদের ঋতু আর বায়ুমণ্ডলগোটা সৌরমণ্ডলে শুরু হয়ে যেতে পারে অসম্ভব উথালপাতালতবে সেই তরঙ্গের রেশ ফুরিয়ে গেলে আবার সব কিছু ফিরে আসতে পারে স্বাভাবিক অবস্থায়’’
বেঙ্গালুরুর রামন রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (আরআরআই) প্রফেসর, ভারতে গ্যালাক্সি-গবেষণার অন্যতম জ্যোতির্বিজ্ঞানী বিমান নাথ জানাচ্ছেন, ‘‘একটা ঘটনা আমাদের খুবই ভাবিয়ে তুলেছেতা হল, কেন এত হন্তদন্ত হয়ে, এত জোরে ছুটছে আমাদের গ্যালাক্সির অন্য তারাগুলো? কেন সুপারসোনিক গতিতে ছুটছে জিটা ওফিউচি’? তা কি গ্যালাক্সি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার মুখে? গেলে, কোথায় তাদের গন্তব্য, এমন অনেক প্রশ্নেরই সদুত্তর মেলেনি এখনও’’
http://www.anandabazar.com/others/science/massive-star-approaching-solar-system-with-tremendous-speed-dgtl-1.287376#

চাঁদে গড়ে উঠবে বসতি





একদিন চাঁদে যাবে মানুষ, গড়ে উঠবে বসতি-এমন স্বপ্ন দেখেন অনেকেইএবার স্বপ্ন এবার সত্যি হওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছেন একদল গবেষক

গবেষকদের ভাষ্য, নভোচারী আর রোবটিক ব্যবস্থার সমন্বয়ে চাঁদের বুকে স্থাপনা তৈরি করে সেখানে মানব বসতি তৈরি করা যাবেমঙ্গল বা অন্য কোনো গ্রহে যেতে মানুষ চাঁদের এই গ্রামে বা কলোনিতে গিয়ে প্রাথমিক আশ্রয় নেবেতবে তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে ২০৩০ সাল পর্যন্ত

সিলাইভ নেভিল নামের যুক্তরাষ্ট্রের নটর ডেম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষক জানান, চাঁদের সম্পদ নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছেএখন সেই সম্পদ বাস্তবে কাজে লাগানো যায় কিনা তা ভেবে দেখা দরকারএরপর সেই সম্পদকে ব্যবহার উপযোগী করতে হবে

চাঁদে বসতি গড়ে তোলার লক্ষ্যে ‘মুন ২০২০-২০৩০-আ নিউ এরা অব কোঅর্ডিনেটেড হিউম্যান অ্যান্ড রোবোটিক এক্সপ্লোরেশন’ নামের একটি সিম্পোজিয়াম আয়োজন করে নেদারল্যান্ডসে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি (ইএসএ)এতে বসতি গড়ে তোলার জন্য যে সব প্রযুক্তি লাগতে পারে তার উন্নয়ন নিয়ে কথা বলেন গবেষকরাখবর: আইএএনএস

নতুন বছরে যেসব প্রযুক্তি বদলে দেবে জীবন




মানুষের জীবনধারাকে স্বাচ্ছন্দ্যময় করে তুলতে প্রতিবছরই নতুন প্রযুক্তি পণ্য বাজারে আসেআর এদের মধ্যে খুব অল্প কটিই মানুষের মনে দাগ কাটে, টিকে থাকে বছরের পর বছরএ বছর কি তেমনই কোন বৈপ্লবিক প্রযুক্তির সংস্পর্শে আসবে পৃথিবী? উত্তর দিয়েছে, বিখ্যাত মার্কিন পত্রিকা দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালপত্রিকাটির ভাষায়: প্রচলিত সায়েন্স ফিকশনধারণা এবছর হয়ে যাবে সায়েন্স ফ্যাক্ট’! প্রযুক্তিগত উত্কর্ষতায় ২০১৬ সাল আগের সবকিছুকে ছাপিয়ে যেতে পারে বলে পত্রিকাটির অভিমতচলতি বছরের এমন কয়েকটি সম্ভাব্য বৈপ্লবিক প্রযুক্তি ও যন্ত্র নিয়ে এই আয়োজন

সাউন্ডওয়াল : যারা মনে করেন, শিল্প শুধু চোখে দেখার জিনিস, সাউন্ডওয়াল তাদের ধারণাকে ভুল প্রমাণে যথেষ্টআধুনিক প্রযুক্তির এ ক্যানভাসে শুধু শৈল্পিক কোন চিত্রকর্মই ভাসবে না, সঙ্গে বাজবে চিত্রশিল্পীর বেছে নেয়া গানওই গানের শব্দে চিত্রকর্মের সৌন্দর্য অনন্য মাত্রা পাবে, তাতে সন্দেহ নেইবর্তমানে সাউন্ডওয়ালের সীমিত একটি সংস্করণ বাজারে এসেছেপ্রখ্যাত শিল্পী ব্রুস স্প্র্রিংস্টিনের একটি প্রিন্ট ও তার নিজের বেছে নেয়া ধারালো কণ্ঠের কয়েকটি গান থাকবে সাউন্ডওয়ালেদাম পড়বে ৩ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার (প্রায় পৌনে তিন লাখ বাংলাদেশি টাকা)

ডেভিয়ালেট ফ্যান্টম ওয়্যারলেস সাউন্ড সিস্টেম : সাধারণ কোন প্রযুক্তিকে অসাধারণ কিছুতে পরিণত করার জন্য ডেভিয়ালেট অনেক বছর ধরেই খ্যাতদ্য ফ্যান্টম এ ধরনেরই অসাধারণ কিছুদেখতে এ যন্ত্রটা অনেকটা বিশ্বখ্যাত সাইয়েন্স ফিকশনচলচ্চিত্র স্টার ওয়ার্সেডেথ স্টার’-এর মতোফ্যান্টম ঘরের যেকোন স্থানে রাখলেই পুরো ঘরজুড়ে শব্দের ঝঙ্কার শোনা যাবেএর মূল্য ১৪০০ মার্কিন ডলার (১ লাখ ৯ হাজার টাকা)অনায়াসেই লিভিং রুমের অসাধারণ এক অনুষঙ্গ হয়ে উঠতে পারে এটি

ল্যান্ট্রনিক্স য্যানো কোয়াডকপ্টার : ছোট কপ্টার ও কোয়াডকপ্টার নতুন কিছু নয়তবে ল্যান্ট্রনিক্স য্যানো কোয়াডকপ্টারের বিশেষত্ব হচ্ছে, এর ছোট্ট আকারএছাড়া সাধারণ একটি অ্যাপের সাহায্যে একে নিয়ন্ত্রণ করা যায়সেন্সরের মাধ্যমে কোয়াডকপ্টার বাধা শনাক্ত করে তা এড়িয়ে চলতে পারেআধুনিক খেলনা হিসেবে যে কাউকে এটি আকর্ষণ করার ক্ষমতা রাখে

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি :এ হলো কাল্পনিক বাস্তবতাআপনি যেমনটা ভাববেন, বাস্তবে ঠিক তেমনই অনুভূত হবেমানুষ অনেক কিছুই কল্পনা করে, আর ভাবে, ‘ইশ! এমন যদি সত্য হতো!মানুষের এমন কল্পনাকে বাস্তবতার সংস্পর্শ পাইয়ে দেয়ারই আয়োজন ভার্চুয়াল রিয়েলিটিএ বছর অবশেষে ভার্চুয়াল বাস্তবতা বাস্তবহয়ে  দেখা দিবেবহু কাঙ্ক্ষিত অকুলাস রিফট হেডসেট আসছে এবারএর পরেই আসছে এইচটিসির ভাইভ, সনির প্লে-স্টেশন ভিআরঅত্যাধুনিক সেন্সর ও ইমেজিং প্রযুক্তির এসব হেডসেট কানে দিয়ে আপনার মনে হবে আপনি বোধহয় কল্পনার জগতে আছেনগেমস ও বিভিন্ন যুদ্ধ-লড়াইয়ের কাল্পনিক জগত্ হবে এ প্রযুক্তির সবচেয়ে বড় আকর্ষণএছাড়া ৩৬০ ডিগ্রি ভিডিও ও অ্যাপসের কারণে আপনি এ বছর কাল্পনিক বাস্তবতার অনেক কাছে চলে আসবেনমনে হবে সব টিকেট বিক্রি হয়ে যাওয়া কোন কনসার্টের একেবারে সামনের সারিতে আছেন, কিংবা ঘরে বসে উপস্থিত আছেন কোন মিটিং-এ!

বুদ্ধিমান মেসেজিং অ্যাপ :২০১৬ সালে মেসেজিং কেবল বন্ধুদের কাছে এসএমএস পাঠানোর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে নাবরং এটি হয়ে উঠবে সব ধরনের রোবটিক সাহায্য পাওয়ার উপায়ওসানফ্রান্সিসকো এলাকায় ফেসবুক মেসেঞ্জারের পরীক্ষামূলক সংস্করণ ব্যবহারকারীরা কণ্ঠের নির্দেশে আশেপাশের কোন রেস্তোরাঁয় আসন বুক দিতে পারেনবন্ধুকে দেয়ার জন্য কিনতে পারেন উপহারগুগলও একই ধরনের একটি অ্যাপ বানানোর দিকে মনোযোগ দিয়েছেরোবটিক বুদ্ধিমত্তার বাইরেও অনেক কিছু যুক্ত হবে মেসেজিং অ্যাপেকারও সঙ্গে অ্যাপয়েন্টমেন্ট ঠিক করা, গেম খেলা, বার্তা অনুবাদসহ অনেক কিছু সম্ভব হবে এবার

নিরাপদ ও বুদ্ধিমান ড্রোন :সবাই আকাশ থেকে তোলা ড্রোনের ছবি ভালোবাসেকিন্তু যেভাবে ড্রোনের ব্যবহার বাড়ছে, তাতে একে শিগগিরই হেলিকপ্টারের চেয়েও ক্যামেরার মতো মনে হবে বেশিলিলি নামে একটি ড্রোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান পানিরোধক ড্রোন বানাচ্ছেআপনি যখন নৌকায় থাকবেন, সমুদ্রতীরে সেলফি নেবেন, তখন আপনাকে অনুসরণ করবে এ ড্রোন

ইউএসবি টাইপ-সি পোর্ট :যে ইউএসবি পোর্ট আপনি দেখে আসছেন, সম্ভবত অপছন্দও করতেন, তা পরিবর্তিত হতে যাচ্ছে২০১৬ সালে, আরও ছোট ও দ্রুতগতির ইউএসবি টাইপ-সি পোর্ট আসতে যাচ্ছেইতিমধ্যেই অ্যাপলের নতুন ম্যাকবুক ল্যাপটপ ও গুগলের নেক্সাস ৬পি মোবাইল ফোনে দেখা গেছে এ পোর্ট

কণ্ঠের নিয়ন্ত্রণ সর্বত্র :হ্যাঁ, গ্যাজেট এ বছর শুনবে সবকিছু২০১৬ সালে কণ্ঠ-পরিচালিত ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রীতে বুদ্ধিমত্তা ও নির্ভুলতা বৃদ্ধি পাবেএছাড়া যন্ত্র এবার আপনার সঙ্গে কথা বলবে আরও স্বাভাবিকভাবেবিশেষ করে টিভি, সাউন্ড সিস্টেম ও গৃহস্থালি ইলেক্ট্রনিক্স যন্ত্রে এর প্রভাব থাকবে বেশি

বহু লেন্স ও সেন্সরের ক্যামেরা :ছবির মান, ক্যাপচারের গভীরতা ও থ্রি-ডিতে দেখার ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য উন্নততর হচ্ছে ক্যামেরার সেন্সরযুক্ত হচ্ছে একাধিক লেন্সইন্টেলের রিয়েলসেন্সের মতো কিছু ল্যাপটপ ও ট্যাবলেটে ইতিমধ্যেই একাধিক সেন্সরযুক্ত ক্যামেরা বসানো হয়েছেক্যামেরায় মুখায়ব দেখে লগ-ইন করার সুবিধা যুক্ত হবেওয়াল স্ট্রিট জার্নালের পরামর্শ, এখনই তাই দামি ডিএসএলআর কেনার দিকে ঝুঁকবেন নাএকাধিক-লেন্স প্রযুক্তির ক্যামেরার মাধ্যমে আপনি ভালো ছবি তুলতে পারবেনআকার ও ওজনে সেসব ক্যামেরা হবে আরও সুবিধাজনক

স্বনির্ভর স্মার্টওয়াচ :বর্তমানে স্মার্টওয়াচ হাঁটার সময় পদক্ষেপের সংখ্যা গোনা ও সময় বলা ছাড়া তেমন কিছুই করতে পারে নাতবে স্মার্টওয়াচের নিজস্বতা দেখা যাবে এ বছরএসব ঘড়িতে এখন থাকবে ওয়্যারলেস, ফোন ও জিপিএস প্রযুক্তিফলে ফিটনেস সচেতন ব্যক্তিরা পাবেন আরেকটু সুবিধাএলজি ও স্যামসাং সম্প্র্রতি সেলুলার ইন্টারনেট সুবিধাযুক্ত স্মার্টওয়াচ বাজারে ছেড়েছেখুব শিগগিরই স্মার্টওয়াচের সঙ্গে যুক্ত হবে ওয়্যারলেস প্রযুক্তিও

গৃহস্থালি যন্ত্রে ইন্টারনেট :এখন গৃহস্থালি যন্ত্রেও ইন্টারনেটের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছেপ্রিন্টার ও ওয়াশারের মতো বিভিন্ন যন্ত্রে যখন কালি বা ডিটারজেন্ট শেষ হয়ে যাবে, তখন আপনা-আপনিই এটি অর্ডার দেবেএমন প্রযুক্তি নিয়ে এসেছে অ্যামাজনএছাড়া গুগলের নেস্ট নামে আধুনিক ঘরে যেসব যন্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে, সেসবে ইন্টারনেট সংযোগ অপরিহার্যযেমন, সিকিউরিটি লক, ফায়ার অ্যালার্ম, ইত্যাদি
www.ittefaq.com.bd/science-&-tech/2016/01/08/50477.html