মানুষের মতোই 'শিখতে পারা' মেশিন




বিজ্ঞানীরা এমন একটি মেশিন উদ্ভাবন করেছেন যেটা মানুষের মস্তিষ্কের মতোই নতুন তথ্য শিখতে পারেবৃহস্পতিবার গবেষকরা একথা জানিয়েছেনএকটি বিজ্ঞান বিষয়ক পত্রিকায় একে একটি কম্পিউটার মডেল হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছেএতে বলা হয়, এর মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা কৃত্রিম বুদ্ধিবৃত্তি সৃষ্টির ক্ষেত্রে এগিয়ে গেলপ্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ‘এই কম্পিউটার মডেলটি মানুষের মতো একটি উদাহরণ থেকে নতুন নতুন ধারণা শিখতে সক্ষমএতে আরো বলা হয়েছে, ‘যদিও প্রাথমিক পর্যায়ে মডেলটি এখন শুধুমাত্র অক্ষর থেকে লিখা শিখতে পারেতবে ভবিষ্যতে এটা নাচ, সংকেত, অঙ্গভঙ্গি, কথা বলা ও ইঙ্গিত ভাষার মতো চিহ্নভিত্তিক জিনিসও শিখতে পারবেম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউ ফর টেকনোলোজি (এমআইটি)র প্রফেসর জশুয়া তেনেনবাউয়াম জানান, তিনি এমন একটি মেশিন তৈরি করতে চান যেটা বালক-বালিকাদের মানসিক সামর্থ্যকে অনুকরণ করতে সক্ষমএ পদ্ধতিকে বলা হয়, বেসিয়ান প্রোগ্রাম লার্নিং (বিপিএল)

মানুষের অস্তিত্বই সঙ্কটে




বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠেছে এই পৃথিবীখেতে ফসল নেইশ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার উপযুক্ত হাওয়া নেইতাই ভিন্‌ গ্রহে উপনিবেশগড়ার খোঁজে পৃথিবী ছেড়ে পাড়ি দিয়েছিল এক দল নভশ্চরখুঁজেও পেয়েছিলবছরখানেক আগে মুক্তি পাওয়া ক্রিস্টোফার নোলান পরিচালিত ইন্টারস্টেলারছবিটি দর্শককে নিয়ে গিয়েছিল এ রকমই এক কল্পবিজ্ঞানের জগতে
পৃথিবীর বাইরে ঘর বাধার স্বপ্ন মানুষের অনেক দিনেরসেই স্বপ্নকে সত্যি করে তুলতে মহাকাশে ফোটাচ্ছে ফুলওকিন্তু একই সঙ্গে চলছে উল্টো দৌড়নানা ভাবে বিপন্ন করে তোলা হচ্ছে পৃথিবীকেএই পথ থেকে সরে না এলে ভিন্গ্রহে বসত গড়ার আগেই হয়তো পৃথিবীতে মুছে যাবে মানুষের অস্তিত্ব, হুঁশিয়ার করলেন বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিংআজ বিবিসির রিথ বক্তৃতাদেওয়ার আগে তিনি মনে করিয়ে দিলেন, ‘‘অন্য কোনও গ্রহে উপনিবেশ গড়ে তুলতে অন্তত একশো বছর লেগে যাবেতত দিন অন্তত পৃথিবীটাকে বাসযোগ্য করে রাখি আমরা’’ কী ভাবে তা সম্ভব, তার দাওয়াইও দিলেন তিনিহকিংয়ের কথায়, ‘‘পৃথিবীর বিপদগুলিকে চিনে নিয়ে তাতে লাগাম টানতে হবে’’
বিপদগুলি কী
পরমাণু যুদ্ধ, পরিবেশ দূষণ, উষ্ণায়ন, জিন বদলানো ভাইরাসতালিকাটি দীর্ঘহকিংয়ের বক্তব্য, একের পর এক দেশ তাদের অস্ত্রভাণ্ডারে মজুত করছে পরমাণু বোমাবেহিসেবি জীবনযাপনের জন্য বেড়ে চলেছে জ্বালানি খরচযা বিষ ছড়াচ্ছে পরিবেশেউন্নত দেশগুলির গবেষণাগারে গোপনে হয়ে চলেছে একের পর এক পরীক্ষা, রাসায়নিক বিক্রিয়াযা জন্ম দিচ্ছে কালান্তক ভাইরাসেরআর এই সবই ছায়া ফেলছে মানবজাতির আয়ুতে
তাহলে মানবজাতিকে এর থেকে বাঁচানোর উপায়? বিজ্ঞানী হিসেবেই তিনি  সাবধান করে দিয়েছেন বি়জ্ঞান গবেষণার ফলে ঘনিয়ে আসা সর্বনাশ নিয়েহকিংয়ের বক্তব্য, বি়জ্ঞান গবেষণাকে মুক্ত করতে হবেসবার অগোচরে আর গবেষণা নয় নয়, পরীক্ষা-নিরীক্ষা বা গবেষণা যা চলছে, তা জানাতে হবে সকলকেবোঝাতে হবে মানুষকে
কৃত্রিম ভাইরাস, বুদ্ধিমান কম্পিউটার কিংবা বিশ্ব উষ্ণায়ন যে সেই সব বিপদের নমুনা, তা তিনি বলে আসছেন দীর্ঘদিন ধরেইআজও তিনি বলেন, ‘‘এক বছরের মাপকাঠিতে হয়তো এই বিপদের মাত্রা হিসেব করা যাবে নাকিন্তু একসঙ্গে অনেকগুলো বছরহাজার কিংবা দশ হাজার বছরেবিপদ প্রায় নিশ্চিততার আগে যদি মানুষ অন্য কোনও গ্রহে উপনিবেশ গড়ে তুলতে পারে, চলে যেতে পারে অন্য কোনও নক্ষত্রের আশপাশে, তা হলে হয়তো পৃথিবীতে সর্বনাশ ঘনিয়ে এলেও মহাবিশ্ব থেকে মানুষ নিশ্চিহ্ন হবে না’’
তবে এখনই আস্থা হারাচ্ছেন না কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের এই বিজ্ঞানীএক দিকে যেমন তিনি দেখতে পাচ্ছেন, পৃথিবীর বিকল্প না খুঁজে পেলে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে মানুষ, তেমনি তাঁর বিশ্বাস, মানুষই পারবে এই বিপদ নিয়ন্ত্রণ করতেতাই যাঁরা বি়জ্ঞানী হতে চান, তাঁদের জন্য হকিংয়ের পরামর্শ, গবেষণা কোন পথে এগিয়ে চলেছে তা জনসাধারণকে জানানোর দায়িত্ব তাঁদেরই নিতে হবেএটাও দেখতে হবে যে, গবেষণার অগ্রগতি যেন ঠিক পথে এগোয়গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় যদি সকলের বিজ্ঞান সম্পর্কে সাধারণ ধারণা থাকে তবেই তা সম্ভব
বিজ্ঞানীদের হকিংয়ের তাই পরামর্শ, ‘‘জনগণকে সোজা ভাষায় জানান, আপনি কী করতে চাইছেন, কে জানে, এর ফলে আপনিই হয়তো ভাল করে চিনবেন নিজেকে’’

http://www.anandabazar.com/others/science/hawking-s-warning-on-human-existence-in-crisis-1.289250